সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ফ্যাসিস্ট আ.লীগের নেতা মোঃ কামরুল ইসলাম নান্টুর রাজধানী ঢাকায় আবাসিক হোটেলের নামে অবৈধ পতিতা, মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা। কালের খবর শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় ইসলামী শ্রমনীতি চালু করতে হবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে পৌর বিএনপি। কালের খবর অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত। কালের খবর মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির নেতৃত্বে জামাল-মুকুট। কালের খবর তিল ধারণের ঠাঁই নেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। কালের খবর আমতলীতে ভূমি দস্যুর অত্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন। কালের খবর নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাব নির্বাচন সম্পন্ন : সালাম সভাপতি, ছনি সম্পাদক নির্বাচিত। কালের খবর সীতাকুণ্ডে জামায়াত নেতার ওপর হামলা, প্রতিবাদে মিছিল সমাবেশ। কালের খবর আমাকে ও আমার মেয়েদের কুপ্রস্তাব দেয় রাজ্জাক। কালের খবর
সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর

সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর

 

মোঃ আশরাফ উদ্দিন, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, কালের খবর : সীতাকুণ্ডকে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলায় রূপ দিতে চান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী।

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন। এর আগে সন্ধ্যা ছয়টায় উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও সীতাকুণ্ড আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। উপজেলা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সেক্রেটারি মো. আবু তাহের, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মু. কুতুব উদ্দিন শিবলী, শিল্প ও বাণিজ্য এবং যুব বিভাগের সম্পাদক শামসুল হুদা, মিডিয়া সম্পাদক আবুল হোসেন, পৌর আমীর হাফেজ আলী আকবর। সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুলাইমান মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক এম কে মনির, সহ-সভাপতি ইলিয়াছ ভূঁইয়া, কামরুজ্জামান কামরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহান সিদ্দিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন।

এসময় আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, আমি এমপি নির্বাচিত হলে এমপি নয় জনগণের সেবক তথা খাদেম হয়ে থাকব। এই সীতাকুণ্ডে অশিক্ষিতের হার শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনব। এছাড়া বেকারত্ব পুরোপুরি লাঘব হবে আমার অন্যতম লক্ষ্য। এসময় তিনি সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণসহ সকল ধরণের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

বিগত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নির্যাতনে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত জামায়াতে ইসলামী উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সীতাকুণ্ডের জমিনে ১১ জন ভাই শাহাদাতবরণ করেছেন। ভাতের পাত থেকে ওসমান গনি ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে আওয়ামী পুলিশ। শহীদ আমিন ভাইকে তার স্ত্রী ও সন্তানের কাছ থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। শহীদ বাবু ভাইকে যা অবস্থায় কুপিয়ে নৃশংস বাবা হত্যা করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। তেমনিভাবে শহীদ পারভেজ ভাই, শহীদ মোশাররফ ভাইকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এসবের পিছনে ছিল আওয়ামী লীগ নেতারা। স্বৈরাচারী হাসিনা বিগত ১৭ বছরে জামায়াতে ইসলামীর ১১ জন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে, আইনের অপব্যবহার করে নানা কলা কৌশলে হত্যা করেছে। সেই তালিকা থেকে বাদ যাননি বিশ্ব বরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম। তাদেরকে বছরের পর বছর পৈশাচিকভাবে হত্যা করে হাসিনা। এই সীতাকুণ্ডেও আমাদের শত শত নেতাকর্মীরা ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর, ঈদের পর ঈদ ঘরে আসতে পারেননি, মা-বাবার সাথে দেখা করতে পারেনি, স্ত্রী-সন্তান পুত্র-পরিজনের মুখ দেখতে পারেননি। আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী আরো বলেন, আমরা ভাইয়ের জানাযয় পড়তে পারিনি, আদরের বোনের বিয়েতে আসতে পারেনি, ছেলের আকিকায় যেতে পারিনি। এমনকি আমাদের অনেক ভাইয়ের অনাগত সন্তান দুনিয়ায় আসার সময় তারা ছিলেন কারারুদ্ধ। এভাবে তারা হাসিনা ও তার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত ও শোষিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সাংবাদিকদের কলম কেড়ে নিয়েছিল। তাদেরকে লিখতে দেয়নি, কথা বলতে দেয়নি। অনুসন্ধান করতে দেয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট করলে তার বাহিনীরা কল দিয়ে হুমকি দিতো। বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার সীমাহীন জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। আর এই জুলুম থেকে বাদ যায়নি সাংবাদিকরাও। তার অন্যতম নজির হাসিনা সাংবাদিক মহলকে সবদিক থেকে বঞ্চিত করেছে। সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন সেঞ্চুরী পার হয়েছে কিন্তুু কোন কূলকিনারা হয়নি। আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে নির্যাতন করে দেশান্তর হতে বাধ্য করেছে। সংগ্রামের সম্পাদককে জনসম্মুখে বিনা কারণে লাঞ্চিত করেছে। অফিসে হামলা করে ভাঙচুর করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আমার দেশ পত্রিকা, ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি, সিএসবি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের অপরাধ ছিল সত্য বলা, সত্য মানুষের কাছে তুলে ধরা। হাসিনার গণতন্ত্র হত্যার মিশনের পাশাপাশি অন্যতম মিশন ছিল গণমাধ্যম নিধন। এই মিশনে শতশত সাংবাদিকরা চাকরী হারা হয়েছে, পরিবার নিয়ে কষ্টে পড়েছে। শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে। অনেকে দেশের বাইরে চলে প্রিয় দেশ ছেড়ে। এভাবে হাসিনা গণমাধ্যমের গলাটিপে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা আজ সুযোগ এসেছে সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার। সব বাঁধা উপেক্ষা করে সত্যকে সত্য হিসেবে তুলে ধরা ইবাদত। আপনাদেরকে কঠিন, মুক্ষম এবং সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি আমরাও দোষী হয় আমাদের বিরুদ্ধেও লিখবেন। তবু সত্যকে জনগণের কাছে সত্য হিসেবে আয়নার মতো তুলে ধরবেন নৈতিক দায়িত্ব। সত্য উদঘাটন করা, সত্য অনুসন্ধান করা, সত্য জানানো আপনাদের কর্তব্য। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে সাংবাদিকদের পেশাগত মান ও দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করা হবে। বিশেষ বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে তাদেরকে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দিতে বিদেশে পাঠানো হবে।

তিনি আরও বলেন, ১১ জন শহীদের শাহাদাতের ঘটনায় আবারো ১১ টি মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হবে বলে জানিয়েছেন আমাদের এই নেতা। তিনি বলেন আমাদের ভাইদেরকে হত্যার ঘটনায় আমরা মামলা দায়ের করলেও নানা কায়দা কৌশলে আওয়ামী লীগ সেসব মামলা নষ্ট করে ফেলে এবং সমস্ত প্রমাণ তারা নষ্ট করে দেয়। কিন্তু কোন অবস্থায় শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দিব না আমরা।

তবে নিরীহ কাউকে জামায়াত মামলা দিয়ে হয়রানি করবে না উল্লেখ করে সংসদ সদস্য প্রার্থী আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার যদি মামলা করে আমরা সহযোগিতা করব। দল থেকে কারো বিরুদ্ধে মামলা করিনি এবং করা হবেও না। আমাদের আমীরে জামায়াতের ঘোষণাও এটি।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে, জাতির স্বার্থে দেশের মানুষের স্বার্থে সমমননা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবে।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের গ্রন্থনা সম্পাদক মো. আশরাফ উদ্দিন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম শাহীন, বিজ্ঞান ও গবেষণা সম্পাদক প্রফেসর নাজিমুজ্জামান রাশেদ, দপ্তর সম্পাদক মো. জামশেদ উদ্দিন, ক্রীড়া সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রুমন, আইন সম্পাদক এডভোকেট শাহাদাত হোসেন, অ্যাপান সম্পাদক সৈয়দ আল হোসাইন আয়াজ, সদস্য সরোয়ার কামাল জিকু, নাছির উদ্দীন শিবলু, হাসান তারেক, আব্দুল মামুন প্রমুখ।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com